ঘরে বসে টাকা আয়ের পদ্ধতি
বর্তমান যুগ তথ্য প্রযুক্তি ইন্টারনেট আর স্মার্টফোনের বদলতে এখন আর অর্থ
উপার্জনের জন্য বাইরে গিয়ে চাকরি করা একমাত্র নয়।বিশেষ করে যারা গৃহিণী
শিক্ষার্থী কিংবা যারা বাড়িতে বসে কিছু করতে চান তাদের জন্য ঘরে বসে টাকা
আয় করা এখন খুব সহজ ও বাস্তবসম্মত হয়ে উঠেছে।ঘরে বসে উপার্জনের অনেক
উপায় রয়েছে যেগুলোর মাধ্যমে সময় ও দক্ষতা কাজে লাগিয়ে মাসে কয়েক হাজার থেকে
কয়েক লাখ টাকা আয় করে সম্ভব। এইসব পদ্ধতি গুলোর মধ্যে রয়েছে ফ্রিল্যান্সিং,
ইউটিউব, ব্লগিং, অনলাইন টিউশনি, ডিজিটাল মার্কেটিং,অ্যাফিলিয়েট
মার্কেটিং অনলাইন কোর্স তৈরির গ্রাফিক্স ডিজাইন সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্ট এবং
কন্টেন্ট রাইটিং।
এই ব্লগে আমরা এমন ১১ টি পরিচিত কার্যকর ঘরে বসে আয় করে পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা
করব, যেগুলো আপনাকে আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী করে তুলতে পারে ।তবে মনে রাখবেন যে কোন
কাজ হয়ে সাফল্যের জন্য প্রয়োজন ধৈর্য ,পরিশ্রম নিয়মিত চর্চা। আসুন এক নজরে
দেখে নেই এই ১১ টি পদ্ধতি কি কি এবং কিভাবে এগুলো ঘরে বসে আয় করার পথ সুগম
করে।
সূচিপত্র ; ঘরে বসে টাকা আয়
- ফ্রিল্যান্সিং
- অনশনিলাইন টিউ
- ইউটিউব ভিডিও তৈরি
- কনটেন্ট রাইটিং
- ডিজিটাল মার্কেটিং
- অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং
- গ্রাফিক ডিজাইন
- সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্ট
- ই কমার্স ব্যবসা
- অনলাইন কোর্স তৈরি
- ঘরে বসে ব্লগিং
- শেষ কথাঃ ঘরে বসে টাকা আয়
ফ্রিল্যান্সিং
ফ্রিল্যান্সিং মানে হচ্ছে কোন প্রতিষ্ঠানে স্থায়ী কর্মচারী না হয়েও
নির্দিষ্ট সময় ও চুক্তি ভিত্তিতে কাজ করা। ঘরে বসে ফ্রিল্যান্সিং করে মানুষ মাসে
হাজার হাজার টাকা আয় করছে। ফাইবার, ফ্রিল্যান্সার-ডটকম এসব প্লাটফর্মে
রেজিস্ট্রেশন করে, আপনি গ্রাফিক্স ডিজাইন, ওয়েব ডেভেলপমেন্ট, ভিডিও এডিটিং,
কন্টেন রাইটিং, ডাটা এন্ট্রি, ট্রান্সলেশন, ডিজিটাল মার্কেটিং ইত্যাদি কাজ করতে
পারেন।
প্রথমে একটি নির্দিষ্ট স্কিল ভালোভাবে শিখে নিন। এরপর একটি ভালো প্রোফাইল তৈরি
করে ক্লাইন্টদের কাছে নিজের সেবা তুলে ধরুন। সময়ের সঙ্গে অভিজ্ঞতা রেটিং
বাড়লে আয়ও বাড়বে। অনেকেই ফ্রিল্যান্সিং দিয়ে শুরু করে পরবর্তীতে নিজের
এজেন্সি খুলেছেন। তাই এটি ঘরে বসে টাকা আয়ের এর অন্যতম নিরাপদ লাভজনক
পথ।
অনশনিলাইন টিউ
যদি আপনার একাডেমিক বিষয়গুলোতে ভালো দক্ষতা থাকে, তাহলে অনলাইন হতে পারে আপনার
আয়ের একটি দুর্দান্ত উপায়। বিশেষ করে গণিত, ইংরেজ,বিজ্ঞান,আইসিটি ইত্যাদি
বিষয়গুলোতে চাহিদা অনেক বেশি।একজন দক্ষ শিক্ষক অনলাইনে প্রতি ঘন্টায়
৫০০ থেকে ১৫০০ টাকা পর্যন্ত আয় করতে পারে। পড়াশোনা করানো ছাড়া আপনি এক্সাম
প্রিপারেশন, এসাইনমেন্ট,ইউনিভার্সিটি এডমিশন কোচিং এসব দিয়ে আয় করতে পারেন।
নিজের ফেসবুক পেজ বা ইউটিউব চ্যানেলে শিক্ষার্থী সংগ্রহ করা যায।
আরও পড়ুনঃ0১
ইউটিউব ভিডিও তৈরি
বর্তমানে ইউটিউব শুধু বিনোদনের মাধ্যম নয়, বরং একটি বড় আয়ের প্ল্যাটফর্ম। আপনি
যদি ভালোভাবে ভিডিও তৈরি করতে পারেন এবং নিয়মিত ফোনটেন্ট আপলোড করেন, তাহলে
ইউটিউব থেকে বিজ্ঞাপন স্পন্সারশিপ ও এফিলিয়েট মার্কেটিং এর মাধ্যমে আয় করা
যায়।
যারা রান্না, ভ্রমণ, শিক্ষা, প্রযুক্তি, জীবনধারা, রিভিউ, শর্ট ফিল্ম,বা
মোটিভেশনাল কন্টেন তৈরি করতে পছন্দ করেন। তারা Youtube এর মাধ্যমে মাসে হাজার
হাজার টাকা আয় করতে পারেন।ইউটিউব পার্টনার প্রোগ্রামের মাধ্যমে ৪০০০ ঘন্টা ওয়াচ
টাইম ও ১০০০ সাবস্ক্রাইব হলে আপনার চ্যানেলমনিটাইজ বেশি।
কনটেন্ট রাইটিং
যদি আপনার লেখার হাত ভালো হয়, তাহলে কনটেন্ট রাইটিং হতে পারে আপনার
আয় করার চমৎকার একটি পদ্ধতি। বিভিন্ন ওয়েবসাইট, ব্লগ, ডিজিটাল
মার্কেটিং, এজেন্সি সব সময় ভালো লোক খুঁজে। এসইও, কন্টেন্ট, ব্লগ আর্টিকেল,
প্রোডাক্ট ডেসক্রিপশন, সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট, এসবের জন্য নিয়মিত লেখকের
প্রয়োজন পড়ে। অনেক বাংলাদেশী ফেসবুক ও লোকাল মার্কেটপ্লেস। প্রতি ৫০০
শব্দের আর্টিকেল আপনি ৫০০ থেকে ১০০০ টাকা পর্যন্ত নিতে পারেন। অভিজ্ঞতা ও
রেফারেন্স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে রেট ও বাড়বে।
আরও পড়ুনঃ ০২
ডিজিটাল মার্কেটিং
ডিজিটাল মার্কেটিং হল অনলাইনে পণ্যের প্রচার ও বিপণের একটি কৌশল। এর মধ্যে এসইও,
ফেসবুক এডস, ইমেইল মার্কেটিং, সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এসব অন্তর্ভুক্ত।
বর্তমানে প্রতিটি প্রতিষ্ঠান অনলাইন মার্কেটিং এর গুরুত্ব দিচ্ছে।
আপনি ডিজিটাল মার্কেটিং শিখে লোকাল ব্যবসার জন্য সেবা দিতে পারেন, অথবা
আন্তর্জাতিক ক্লায়েন্টের সঙ্গে কাজ করতে পারে। এ বিষয়ে কোর্স করে নিজেকে দক্ষ
করে তুলুন তারপর কাজ শুরু করুন সময় সঙ্গে এটি আপনার ক্যারিয়ারও হয়ে উঠতে পারে।
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এমন একটি পদ্ধতি, যেখানে আপনি অন্যের পণ্য বা সেবা প্রচার
করে প্রতিটি ভিত্তিতে কমিশন পান। অ্যামাজন,দারাজ,ক্লিক-ব্যাংক এসব প্লাটফর্মে
এফিলিয়েট প্রোগ্রাম রয়েছে।
আপনার একটি ব্লগ ওয়েবসাইট বা ইউটিউব চ্যানেল থাকলে সেখানে পণ্য রিভিউ
বা গাইড প্রকাশ করে সেই পণ্যের লিঙ্ক শেয়ার করতে পারেন। এবং সেই লিংকে
ক্লিক করে কিনলে আপনি কমিশন পাবেন। এতেই ঘরে বসে ইনকাম করা সম্ভব।
আরও পড়ুনঃ০৩
গ্রাফিক ডিজাইন
ক্রিয়েটিভ চিন্তা থাকলে গ্রাফিক ডিজাইন শিখে ঘরে বসে আয় করা যায়।
লোগো,পোস্টার,ব্যানার, সোশ্যাল মিডিয়া ডিজাইন, বিজনেস কার্ড,প্রেজেন্টেশন
ডিজাইনের কাজ অনলাইনে খুব বেশি ডিমান্ড রয়েছে।ক্যানভা, এডোবি ইলাস্টেটর, ফটোশপ
ব্যবহার করে কাজ শিখে বিভিন্ন মার্কেটপ্লেসে কাজ করতে পারেন। আপনি চাইলে কাস্টম
ডিজাইন বিক্রির জন্য ক্রিয়েটিভ মার্কেট বা Etsy ডিজাইন আপলোড করতে পারেন।
সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্ট
ঘরে বসে সোশ্যাল মিডিয়ার ম্যানেজমেন্ট।বর্তমানে অনেক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান
সেলিব্রেটি ইনফ্লুয়েন্সাররা কাদের ফেসবুক,instagram ইউটিউব পেজ
পরিচালনার জন্য ম্যানেজার খুঁজছে।, আপনি যদি কমেন্ট তৈর্ কমেন্ট রিপ্লাই। ইনবক্স
ম্যানেজমেন্ট ও অর্গানিক রিচ বোঝেন তাহলে সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজার হিসেবে কাজ
করতে পারেন এটা করার জন্য খুব বেশি টেকনিক্যাল স্কিল লাগেনা,। ২৪ ঘন্টা সময়
দিয়ে আপনি মাসে 10 থেকে 30 হাজার টাকা আয় করতে পারেন। একাধিক লাইন মেইনটেইন করে
আয় আরো বাড়ে।
ই কমার্স ব্যবসা
ঘরে বসে ই কমার্স ব্যবসা। আপনি চাইলে নিজেই ঘরে বসে পণ্য তৈরি করে অনলাইনে
বিক্রি করতে পারেন্ এটি হতে পারে হস্তশিল্প জামাকাপড়, কসমেটিক্ খাবার বই
ইত্যাদি।, ফেসবুক স্ দারাজ, বিক্রয় আজকের দিয়েন। অথবা নিজের ওয়েবসাইট খুললে
পণ্য বিক্রি করতে পারেন।। একজন উদ্যোক্তা হিসেবে আপনি ডেলিভারির জন্য কুরিয়ার
সার্ভিস ব্যবহার করবেন এবং অর্ডার পাবেন অনলাইনে। ঘরে বসে সহজেই পণ্য বিক্রয় করে
লাভ লাভবান হওয়া সম্ভব, শুরুতে ছোট পরিসরে শুরু করুন তারপর ধীরে ধীরে ব্যবসা
বাড়ান।
অনলাইন কোর্স তৈরি
ঘরে বসে অনলাইন কোর্স তৈরি আপনারা যদি কোন, নির্দিষ্ট বিষয়ে ভালো দক্ষতা থাকে
যেমন ফটোগ্রাফ্ রান্না, প্রোগ্রামি্ ইংরেজি শেখানো। তাহলে আপনি সেই বিষয়ের উপর
অনলাইনের কোর্স তৈরি করে বিক্রি করতে পারেন। udemy, skillshare,। অথবা নিজের
ওয়েবসাইট কোর্স আপলোড করে আয় করা যায় একবার কোর্স তৈরি করলে আপনি তা থেকে
দীর্ঘদিন ইনকাম করতে পারবেন। অনেককে আবার ফেসবুক গ্রুপ বা গুগল ড্রাইভ ব্যবহার
করে কোডস সেল করে থাকেন, ভিডি্ পিডিএফ লাইভ ক্লাস সব মিলিয়ে এটি একটি লাভজনক
মাধ্যম।
ঘরে বসে ব্লগিং
, আপনি যদি লেখালেখি ভালবাসেন। তাহলে নিজস্ব ব্লগ সাইডে তুলে নিয়মিত পোস্ট করে
আয় করতে পারেন গুগল এডসেন্স sponsorship,affiliate marketing ব্লক থেকে মাসে
হাজার হাজার টাকা আয় সম্ভব. ওয়ার্ডপ্রেস বা ব্লগার ব্যবহার করে আপনি সহজেই ফ্রি
ব্লক খুলতে পারেন. নিয়মিত পোস্ট করলে গুগলে ট্রাফিক বাড়বে। স্বাস্থ্য, শিক্ষা
রিভিউ, ইসলামিক, রান্না ট্রাভেল যেকোন বিষয় ব্লগ লেখা যায়।
শেষ কথাঃ ঘরে বসে টাকা আয়
ঘরে বসে টাকা আয় করা এগুলোর পথ থাকলেও,। সঠিক পরিকল্পনা ও চেষ্টা ছাড়া
কিছুই সম্ভব নয় আপনারা সেটা ভালো লাগে সেটাও। সেটার উপরে দক্ষতা অর্জন করে কাজ
শুরু করেন ধৈর্য ধরে কাজ করলে আপনি সফল হবেনই। শুরুতে সময় বেশি লাগলেও এক সময়
আপনি প্যাসিভ ইনকাম পেতে শুরু করবেন। বাংলাদেশে এখন লেখক তরুণ তরুণী ঘরে বসে
ইনকাম করছ... আপনি নিজেও আয় করা শুরু করতে পারবেন।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url