আলু চাষের সঠিক পদ্ধতি ও নিয়ম
আলু চাষে সঠিক পদ্ধতি ও নিয়ম। বাংলাদেশের সবজির মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় হলো আলু। শুধু খাওয়া নয় এটি একটি অর্থকারী ফসল হিসেবেও বিবেচিত।দেশের প্রায় প্রতিটি অঞ্চলে আলু চাষ হয় এবং কৃষি করা সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ করলেও অল্প খরচে ভালো লাভ পেতে পারে।
আধুনিক কৃষি জ্ঞানের আলোকে এখন সময়
এসেছে প্রযুক্তি নির্ভর ও বৈজ্ঞানিক উপায়ে আলু চাষ করার। ব্লগে আমরা বিস্তারিত
আলোচনা করব কিভাবে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সঠিক নিয়মে আলো চাষ করলে বেশি ফলোরোলা
পাওয়া যায়।
সূচিপত্রঃ আলু চাষের সঠিক পদ্ধতি ও নিয়ম
আলু চাষের উপযোগী মাটি
আলু একটি শীতকালীন সবজি। সাধারণত ১৫ থেকে ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় আলু
চাষের জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত সময়। দোআঁশ মাটি বা বেলে মাটি, দোআঁশ মাটিতে
আলু চাষের বেশি ফলন দেয়।মাটির pH স্তর ৫,৫ থেকে ৬,৫। হলে ভালো ফলন পাওয়া যায়
জমিতে যেন জলাবদ্ধ না থাকে, সেদিকে খেয়াল রাখতে হয়। উপযুক্ত মাটি নির্বাচন করা
হলে আলো বৃদ্ধি ভালো হয় এবং রোগ প্রতিরোধ কম হয়।
উন্নতমানের আলুর বীজ
আলুর ফসল অনেকাংশে নির্ভর করে বীজের গুনগত মানের উপর। বাজারে বিভিন্ন জাতের আলু বীজ পাওয়া যায় যেমন ডায়মন্ড, কার্ডিনাল,গ্রানোলা ইত্যাদি। রোগ মুক্ত ও উচ্চ ফলনশীল জাত বেছে নিতে হবে। প্রতি একরের ৮০০ থেকে ১০০০ কেজির বীজ আলু লাগে। 20 কাটার সময় চোখ না কাটার দিকে লক্ষ্য রাখা জরুরি ভালো করে দেখে বীজগুলি কাটতে হবে।
আলু চাষের জন্য জমির প্রস্তুতি
আলু চাষের আগে জমি ভালোভাবে চাষ করে মাটির ঝুরঝুরে করে নিতে হয়।। জমিতে আগাছা
থাকলে তা পরিষ্কার করতে হবে প্রতি একরের খবর সার ১ থেকে ২ টন্ ইউরিয়া ৮০ কেজি
টি এসপি ১২০ কেজি এবং এমওপি ১০০ কেজি করতে হয়। নিতে হয় এবং সমান করতে হয়।
আলু রোপনের সঠিক সময়
বাংলাদেশের সাধারণত অক্টোবর মাসের শেষের থেকে নভেম্বরের মাঝামাঝি আলুর রকম করা হয়। পদ্ধতিতে আলোর ওপর করা যায়। শাড়ির দ্রুত দুই ফুট এবং গর্তের ৬ থেকে ৮ ইঞ্চি গভীরতা বজায় রাখতে হয়। প্রতিটি গর্তের একটি করে বীজ আলু বসিয়ে দিতে হয় এবং মাটি দিয়ে ঢেকে দিতে হয় এভাবেই আলু লাগানোর নিয়ম।
আলু চাষের সেচ পদ্ধতি
আলু চাষের সেট খুব গুরুত্বপূর্ণ এ বিষয়টি ভালোভাবে খেয়াল রাখতে হবে।প্রথম সেচ রোপনের 15 থেকে 20 দিন পর দিতে হয় এরপর আলু বৃদ্ধির ধাপ অনুযায়ী আরো দুই থেকে তিনবার শেষ প্রয়োজন হতে পারে।তবে অতিরিক্ত পানিতে জলাবদ্ধতা যেন না হয় তা নিশ্চিত করতে হবে। সেদিকে ভালোভাবে খেয়াল রাখতে হবে। এজন্য জমি চারপাশে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা রাখতে হয়।
আলু গাছের পরিচর্যা ও যত্ন
আলু গাছ বড় হলে আগাছা পরিষ্কার করতে হয় আগাছা গাছের বৃদ্ধিতে বাধা দেয় এবং পোকাবক জন্মাতে সাহায্য করে। গাছ একটু বড় হলে মাটি তুলে গাছের গোড়ার চারদিক দিয়ে মাটি দিতে হয়। এটি আলুর ফলন বাড়াতে সাহায্য করে।
আলু গাছের রোগ দমন ও পোকামাকড় দমন
আলু চাষের লেট ব্রাইট, আগাম ব্রাই্ পাতা পাতা রোগ বেশি দেখা যায়। এছাড়াও
পোকামাকড় যেমন আলুর বিটল্ উইপোকা। ইত্যাদি আক্রমণ করতে পারে এজন্য জমি
প্রস্তুতির সময় ভালোভাবে কীটনাশক ব্যবহার করতে হয়। প্রয়োজনে অনুমোদিত
ছত্রাকনাশক ছিটিয়ে দিতে হবে। এতে করে আলু গাছের রোগ দমন হবে।
আলুর উত্তোলনের সময়
আলু রোপনের ৯০ থেকে ১০০ দিন পর। আলু তোলার উপযুক্ত সময় হয়। গাছের পাতা শুকিয়ে গেলে বোঝা যায় যে আলু সংরক্ষণের সময় হয়েছে। প্রথমে জমির মাটি কিছুটা পুড়ে দেখতে হবে আলুর গঠন ভালো হয়েছে কিনা। এরপর কাকি বা প্রধান দিয়ে আলু উত্তোলন করতে হবে।
আলু সংরক্ষণ ও বাজারজাতকরণ
আলু উত্তোলনের ওয়ার্ড তিন বা পাঁচদিনের । খোলা জায়গা শুকিয়ে নিতে হয়। এরপর
ঠান্ডা ও অন্ধকার জায়গায় সংরক্ষণ করতে হবে আলুর জন্য কোল্ড ইস্টর সবচাইতে
উপযোগী সঠিকভাবে সংরক্ষণ করলে চার মাস থেকে পাঁচ মাস পর্যন্ত আলু ভালো থাকে।
বাজারে চাহিদা অনুযায়ী দাম পেলে বিক্রি করা যায়।
আধুনিক আলুর চাষের প্রযুক্তি ও পরামর্শ
বর্তমানে অনেক কৃষক আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে আলো চাষ করেছেন যেমন মালচিং
পদ্ধতি্ বায়োটেক বিট ড্রিপ সেচ ইত্যাদি। কৃষি অফিসারদের পরামর্শ ও কৃষি
প্রশিক্ষণ গ্রহণ করলে সফলতা আরো বাড়ে। স্মার্টফোন কৃষি অ্যাপ বা ইউটিউব ভিডিও
দেখে চাষের কৌশল শিখে নেওয়ায় লাভজনক হতে পারে।
শেষ কথাঃ আলু চাষের সঠিক পদ্ধতি ও নিয়ম
আলু চাষের শুধুমাত্র একটি পেশা নয়, এটি হতে পারে কৃষকের জন্য একটি লাভজনক
ব্যবসার পথ। সঠিক সময়, উন্নত বীজ পরিচর্যা ও আধুনিক প্রযুক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে
যেকোন কৃষক বেশি ফলনওলা অর্জন করতে পারে। বিশেষ করে যারা প্রথমবার আলু চাষ করছেন,
তাদের জন্য এই গাইড কার্যকর হবে বলে আশা করা যায়। আলু চাষের উপায় জানা থাকলে
উৎপাদন খরচ কমানো এবং রোগবালায় নিয়ন্ত্রণ করা সহজ হয়। তাই কৃষি আধুনিক করনীয়
পথে এগিয়ে যেতে এখনই সময়।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url