ওয়েবসাইট থেকে আয় করার ১০টি উপায়

বর্তমানে ডিজিটাল যুগে ওয়েবসাইট শুধু একটি অনলাইন পরিচয় নয়,। এটিআই এর একটি শক্তিশালী মাধ্যমও আপনি যদি একজন কনটেন্ট ক্রিয়েটর, ব্যবসায়্‌ শিক্ষক বা প্রযুক্তি প্রেমী হন ওয়েবসাইটের মাধ্যমে আয় করার একাধিক পথ আপনার জন্য উন্মুক্ত। ঘরে বসে নিজের দক্ষতা,চিন্তাভাবনা, অথবা তথ্য সমৃদ্ধ কনটেন্ট এর মাধ্যমে আপনি প্যাসিভ ইনকামের সুযোগ তৈরি করতে পারেন।


এই লেখায় আমরা আলোচনা করব এমন দশটি জনপ্রিয় ও কার্যকর উপায় যেগুলোর মাধ্যমে একটি ওয়েবসাইট থেকে আপনি নিয়মিত আয় করতে পারেন। প্রতিদিন বিস্তারিত ব্যাখ্যার সঙ্গে থাকবে ফোকাস কিওয়ার্ড এবং কৌশল যা আপনার অনলাইন ইনকামের জাতটাকে আরও মজবুত করে তুলবে।

সূচিপত্রঃওয়েবসাইট থেকে আয় করার ১০ টি উপায়

গুগল অ্যাডসেন্স ইনকাম

Google এডসেন্স হল সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং নির্ভরযোগ্য বিজ্ঞাপন ভিত্তিক আয়ের মাধ্যম। আপনার ওয়েবসাইটে যখন ভিজিটর আসবে, তখন google স্বয়ংক্রিয়ভাবে কিছু বিজ্ঞাপন দেখাবে। যদি কেউ সেই বিজ্ঞাপনে ক্লিক করে, আপনি ইনকাম করবেন। এটি এক ধরনের pay per click ppc আয়ের মডেল। google এডসেন্স ব্যবহার করতে হলে আপনাকে ওয়েবসাইটের মান-সম্মত কনটেন্ট আপলোড করতে হবে এবং কিছু নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে চলতে হবে। এছাড়া, এডসেন্স এপ্রোভ ভালো পেতে হলে সাইটের প্রাইভেসি পলিস্‌ এবাউট পেজ এবং কন্টাক ফর্ম থাকতে হবে। যেসব লোক নিয়মিত ট্রাফিক পায় এবং তথ্যভিত্তিক কন্টেন প্রকাশ করে, তাদের জন্য গুগল এডসেন্স হতে পারে একটি প্যাসিভ ইনকামের ভরসা। শুরুটা ঠিকঠাক হলেও প্রতি মাসে ১০০ ডলার বা তার বেশি আয় করা সম্ভব।

পণ্য প্রচার করে কমিশনায়

এফইলিয়েট মারকেটিং হচ্ছে অন্য কোম্পানির পণ্য আপনার ওয়েবসাইটে প্রচার করা, এবং সেই পণ্য বিক্রি হলে আপনি কমিশন পাবেন। এটা সম্পূর্ণ পারফরম্যান্স ভিত্তিক একটি ইনকাম সিস্টেম। আপনি যদি ব্লগ, রিভিউ বা টিউটোরিয়াল ধরনের কনটেন্ট লিখে্‌ তাহলে এটি আপনার জন্য উপযুক্ত। বাংলাদেশের daraz,amazon,click ও shareasale এর মতপার প্ল্যাটফর্ম থেকে এফিলিয়েট লিংক সংগ্রহ করে ওয়েবসাইট যুক্ত করতে পারেন।, উদাহরণস্বরূপ আপনি যদি একটি ল্যাপটপ রিভিউ করেন এবং সেই পণ্যরাফিলিয়েটলিংক যুক্ত করে্‌ তাহলে কেউ ওই লিংক থেকে কেনাকাটা করলে আপনি কমিশন পাবেন। এই পদ্ধতিতে আয় করতে হলে সঠিক কনটেন্ট, নির্ভরযোগ্য রিভিউ ও এসইও ফ্রেন্ডলি ব্লক তৈরি করা জরুরী। আপনার ইনকামের পরিমাণ নির্ভর করবে ডিজিটরের সংখ্যার উপরে।

অনলাইনে প্রোডাক্ট বিক্রি

আপনার যদি নিজস্ব তৈরি কোন পূর্ণ বা সার্ভিস থাকে, তাহলে তার ওয়েবসাইটের মাধ্যমে বিক্রি করে সরাসরি আয় করতে পারেন। এটি হতে পারে ডিজিটাল পণ্য যেমন ই-বুক, কোর্স সফটওয়্যার কিম্বা ফিজিক্যাল পণ্য যেমন টি-শার্ট, হস্তশিল্পী ইত্যাদি।wordpress woocommerce ব্যবহার করে আপনি সহজেই একটি ই-কমার্স ওয়েবসাইট তৈরি করতে পারেন. এছাড়াshopify,wix squarespace ও একটি ভালো বিকল্প. পণ্য বিক্রির ক্ষেত্রে কাস্টমার সার্ভিস প্রোডাক্ট ডিসক্রিপশন ও পেমেন্ট গেটওয়ে সিস্টেম গুরুত্ব পূর্ণ ভূমিকা রাখে. বাংলাদেশের sslcommerz,bkash,nagot ইত্যাদি সহজ পেমেন্ট সমাধান হিসেবে কাজ করে. নিজের পণ্যের মাধ্যমে আয় করতে চাইলে ওয়েবসাইট হতে পারে আপনার সবচেয়ে বেশি শক্তিশালী প্ল্যাটফর্ম।

স্পন্সার শীপ ও ব্র্যান্ড রিভিউ

আপনার ওয়েবসাইটে যদি ভালো ট্রাফিক পায় এবং নির্দিষ্ট একটি নি দ নিস নিয়ে কনটেন্ট তৈরি করে, তাহলে ব্র্যান্ড কোম্পানিগুলোর আপনার সাইডে তাদের পণ্য সার্ভিস প্রচারের সুযোগ খোঁজে। একে বলা হয় স্পন্সরশিপ। উদাহরণস্বরূপ, আপনি যদি একটি ফুড ব্লক পরিচালনা করে্‌ তাহলে কোন রেস্টুরেন্ট বা খাবার ব্র্যান্ড চাইবে তাদের রিভিউ আপনার ওয়েবসাইটে ছাপাতে। তারা তার জন্য আপনাকে নির্দিষ্ট টাকা দিবে।স্পন্সরশিপ ইনকাম পেতে হলে আপনাকে পেশাদার মানের কনটেন্ট তৈরি করতে হবে এবং ব্র্যান্ডের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তুলতে হবে। এটি একটি লাভজনক এবং সম্মানজনক আয়ের উৎস।

প্রিমিয়ার কনটেন্ট আয়

আপনি চাইলে আপনার ওয়েবসাইটে কিছু কনটেন্ট ফ্রি রাখুন আর কিছু রাখুন প্রিমিয়ার সাবস্ক্রিপশন এর জন্য। যেসব ব্যবহারকারী অতিরিক্ত মূল্যবান তথ্য বা সেবা পেতে চায়, তারা সাবস্ক্রাইব করে সেই কনটেন্ট অ্যা্ক্রোস করতে পারে। এই ধরনের কনটেন্ট হতে পারে কোর্স ভিডিও টিউটোরিয়াল,রিসার্চ  রিপোর্ট ইত্যাদি।memberpress, paidmembershipspro একটা দিয়ে প্ল্যানিং ব্যবহার করে আপনি এমন ব্যবস্থা তৈরি করতে পারেন. যারা নলেজ বেইজ ব্লক বানান যেমন স্বাস্থ্য আইন কোডিং বা শিক্ষাবৃত্তিক তাদের জন্য এটি বিশেষভাবে কার্যকর আয়ের পদ্ধতি।

অনলাইনের কোর্স ইনকাম

আপনি যদি কোন বিষয়ে দক্ষ হন,। তাহলে তা অন্যকে শেখানোর মাধ্যমে আয় করা সম্ভব নিজের ওয়েবসাইটে অনলাইনে কোর্স বা ভিডিও লেসন তৈরি করে বিক্রি করুন। আপনি চাইলে teachble, thinkific, learndash প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করতে পারেন. অনেকেই ইংরেজি শিখানো, প্রোগ্রামি্‌ ফ্রিল্যান্সিং, গ্রাফিক্স ডিজাইন এসব বিষয়ে কোর্স তৈরি করে মাসে হাজার হাজার টাকা আয় করছেন কন্টেন্ট যতই আকর্ষণে হবে শিক্ষার্থীরা ততই বাড়বে বিশ্বাসযোগ্যতা সঠিক সিলেবাস এবং কোয়ালিটি ভিডিও কনটেন্ট এই তিন ধরনের উপাদান থাকলে থাকলে আপনার অনলাইন কোর্স স্যাটেলাইট খুব সহজেই সফল হতে পারে।

ইমেইল মার্কেটিং ইনকাম

ইমেইল মার্কেটিং হচ্ছে এমন একটি কৌশল যা আপনাকে বারবার একই ব্যবহারকারীর কাছে ফিরে যেতে সাহায্য করে। আপনি যদি সেটি সাইটে নিউজ লেটার বা ফ্রি রিসোর্স এর মাধ্যমে ইমেইল কানেক্ট করেন, তাহলে ভবিষ্যতে সেই ব্যবহারকারীর প্রোডাক্ট করতে পারবেন। আপনার ওয়েবসাইটে pop-up বা subscription box বসিয়ে ইমেইল কানেক্ট করুন. তারপর সপ্তাহে ১২ বার তাদের ভালো কনটেন্ট ও অফিলিয়েট লিংক পাঠান এতে করে বিক্রি বা কমিশন ইনকামের সুযোগ বাড়ে।

বিজ্ঞাপন থেকে আয়

google এডসেন্স ছাড়াও এমন কিছু অ্যাড নেটওয়ার্ক আছে যারা আপনার সাইটের বিজ্ঞাপন দেখায় এবং প্রতি ক্লিক বা ভিউয়ের ভিত্তিতে অর্থ প্রদান করে উদাহরণস্বরূপ মিডিয়া, নেট,propellerads, adsterra, infolinks ইত্যাদি. যাদের এডসেন্স অ্যাপ্রুভড, হচ্ছে না বা যারা অন্যের অপশন খুঁজছেন তাদের জন্য এই প্লাটফর্ম ভালো বিকল্প হতে পারে। বিশেষ করে নিউজ সাইট, বিনোদন বা ফ্যাশন ভিত্তিক সাইড এগুলা কার্যকারিতা বেশি। এছাড়া cpm o cpa মডেল ব্যবহার করে আপনার আয়ের পরিমাপ বাড়ানো সম্ভব।

ফ্রিল্যান্সার সার্ভিস ওয়েবসাইট আপনি যদি গ্রাফিক ডিজাইন, কনটেন্ট রাইটি্‌ এ সব বি বা ওয়েবসাইট ডিজাইন করেন তাহলে ওয়েবসাইট হতে পারে আপনার পোর্টফোলিও। আপনি সাইডে নিজের কাজের নমুনা প্রাইসিং ও কন্টাক্ট ফর্ম যুক্ত করে সরাসরি ক্লাইন্ট পেতে পারেন। বা upwork এর চেয়ে অনেক বেশি প্রফেশনাল এবং দীর্ঘমেয়াদি লাভজনক হতে পারে।ব্যক্তি তৈরি করতে এই পদ্ধতি অত্যন্ত কার্যকর।

প্রেইড রিভিউ ইনকাম 

আপনার ওয়েবসাইট যদি নির্দিষ্ট একটি সেক্টর যেমন প্রযুক্তি, ভ্রমণ, স্বাস্থ্য বা শিক্ষা নিয়ে হয়ে থাকে এবং সেখানে ভালো ডিজিটর থাকে, তাহলে বিভিন্ন কোম্পানি আপনার কাছ থেকে তাদের কোন রিভিউ বা গেস্ট পোস্ট দেওয়ার অনুরোধ করবে। আপনি সেই রিভিউ লিখে নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ নিতে পারেন। অনেক সময় তারা সইও র‍্যাংকিং কেনার জন্য আপনার কে অর্থ প্রদান করে। এটি একটি লাভজনক ও নিরাপদ উপায় তবে কনটেন্টর সততা ও ব্যবহারকারীর স্বার্থ রক্ষা করা অবশ্যই জরুরি।

শেষ কথাঃওয়েবসাইট থেকে আয় করা

ওয়েবসাইট থেকে আয় করার কোন অলৌকিক কিছু নয় এটি নির্ভর করে আপনার পরিকল্পনা।পরিশ্রম ও দক্ষতার উপরে। শুরুতে কিছুটা সময় লাগলেও ধৈর্য নিয়মিত কনটেন্ট পাবলিশ করার মাধ্যমে আপনি সফল হতে পারেন। এই লেখায় যেসব পদ্ধতির কথা বলা হয়েছে, সেগুলোর মধ্যে যে কোন একটিকে ভালোভাবে কাজে লাগিয়ে আপনি দীর্ঘমেয়াদি মাসে হাজার হাজার টাকা আয় করতে পারেন। সুতরাং আজই নিজের একটি ওয়েবসাইট তৈরি করুন এবং শুরু করুন অনলাইন ইনকামের যাত্রা।



এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url